• ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১ বিকাল ০৫:৪৮:০০ (30-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:

ইউনুসের সঙ্গে থাকা ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিতে খুন করে ৪ জন


বৃহঃস্পতিবার ১৯শে অক্টোবর ২০২৩ বিকাল ০৪:৫৯



ইউনুসের সঙ্গে থাকা ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিতে খুন করে ৪ জন

ছবি: সংগৃহীত

চ্যানেল এস ডেস্ক: 

ফরিদপুরে ইউনুছ আলী হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান। 

গেল ৮ অক্টোবর ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের কবিরপুর চরের ঝোপের মধ্য থেকে ইউনুছ আলী (৬০) নামে এক বৃদ্ধর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ইউনুছ আলী মেহেরপুর জেলা সদরের নতুন দরবেশপুর গ্রামের বাসিন্দা। 

সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহটি পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় ইউনুছ আলীর স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। 

পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করে পুলিশ। ঘটনাস্থলে পাওয়া একটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাতে পাবনা জেলার সাথিয়া উপজেলায় অভিযান চালিয়ে মো. আবুল কালাম (৩০) ও মো. জিয়াকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর এলাকা থেকে মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৮) ও আব্দুর রহমানকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। 

তিনি আরও জানান, নিহত ইউনুছ আলী মেহেরপুর সদর উপজেলার নতুন দরবেশপুর গ্রামের বাসিন্দা। ইউনুছ আলী আগে নিজ এলাকায় অটোভ্যান চালাতেন। ভ্যানের ব্যাটারি নষ্ট হওয়ায় নতুন ব্যাটারি কিনতে গেলে ২৬ হাজার টাকা দাম হওয়ায় তার মেয়ে এনজিও থেকে লোন নিয়ে তাকে ব্যাটারি কেনার জন্য ২০ হাজার টাকা দেন। বাকি ৬ হাজার টাকা সংগ্রহের জন্য ইউনুছ আলী (৬০) ফরিদপুরে এসে মজুরের কাজ খোঁজেন এবং অবস্থান করেন। 

গত ০৭ অক্টোবর নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চায়ের দোকানে বসে ২০ হাজার টাকা গুনছিলেন ইউনুছ আলী। এটা দেখে জাহাঙ্গীর বিষয়টি তার পাশে থাকা আব্দুর রহমানকে জানায়। তারা দুজন পরামর্শ করে আবুল কালাম ও জিয়াকে জানায়। এরপর তারা চারজন এক হয়ে ইউনুছ আলীকে হত্যা করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক কালাম জমির মালিক সাজে এবং বাকিরা কৃষক সাজে। তখন তিনজন পরিকল্পিতভাবে ইউনুছ আলীকে তাদের সঙ্গে কাজ করার কথা বলে নিয়ে যায়। 

পরে ইউনুছ আলীর কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল নিয়ে ইউনুছ আলীকে হত্যা করে। রাতে চরাঞ্চলে আত্মগোপনে থাকে এবং পরদিন সকালে শহরের মীর আবাসিক হোটেলে উঠে তারা প্রত্যেকে  ৪ হাজার ৫শ’ টাকা করে ভাগ করে নিয়ে ফরিদপুর ত্যাগ করে নিজ নিজ এলাকায় চলে যায়। 

পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান জানান, আটককৃতদের বুধবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। 

নিহতের মেয়ে সাথি আক্তার বলেন, ‘আব্বা আমাদের নিজ এলাকায় অটোভ্যান চালাতেন। ভ্যানের ব্যাটারি নষ্ট হওয়ায় নতুন ব্যাটারি কিনতে গেলে ২৬ হাজার টাকা দাম হওয়ায় আমি এনজিও থেকে লোন নিয়ে তাকে ব্যাটারি কেনার জন্য ২০ হাজার টাকা দেই। বাকি ৬ হাজার টাকা সংগ্রহের জন্য আব্বা ফরিদপুরে মজুরের কাজে এসেছিলেন। 

তিনি আরও বলেন, ‘আব্বাকে মানা করেছিলাম টাকা সঙ্গে না আনতে। বাড়িতে রেখে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু আব্বা বলছিল ফরিদপুরে যাচ্ছি, ৬ হাজার টাকা রোজগার করে ব্যাটারি কিনে নিয়ে আসব। আব্বার কাছ থেকে টাকা নেয়ার জন্যই ওরা আব্বাকে হত্যা করলো।’ 

নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন বলেন, ‘একজন বুড়ো মানুষকে টাকার জন্য ওরা মেরে ফেলল। টাকা নিয়ে ওনাকে ছেড়ে দিত। ওরা পাষণ্ড, সামান্য কিছু টাকার জন্য নির্মমভাবে ওরা তাকে হত্যা করলো। আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’ 

মন্তব্য করুনঃ


সর্বশেষ সংবাদ