• ঢাকা
  • |
  • সোমবার ২২শে বৈশাখ ১৪৩১ রাত ০২:০১:১৬ (06-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

বেইলি রোড ট্রাজেডি: আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেলো অনেক স্বপ্ন


শুক্রবার ১লা মার্চ ২০২৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৩



বেইলি রোড ট্রাজেডি: আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেলো অনেক স্বপ্ন

ছবি: সংগ্রহীত

চ্যানেল এস ডেস্ক: 

রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে আগুন, মুহুর্তেই ঝরে গেলো প্রায় অর্ধশত তাজাপ্রাণ। ভয়াবহ আগুনে প্রাণ হারিয়েছেন সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিশুসহ ৪৬ জন। বিষাদের কালো ছায়া নেমেছে নিহতদের পরিবারে।

মাসখানেক আগে ইতালি থেকে দেশে এসেছিলেন সৈয়দ মোবারক। ইতালিতে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ পেয়েছেন। সম্প্রতি স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ভিসাও হয়ে গিয়েছিল সবার। কিন্তু ইতালি আর যাওয়া হলো না তাদের। আনন্দ উদযাপন করতে বেইলি রোডে খেতে গিয়ে  স্ত্রী স্বপ্না আক্তার, দুই মেয়ে সৈয়দা কাশফিয়া ও সৈয়দা নূর এবং একমাত্র ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহসহ সবাইকে আগুনে পুড়ে মরতে হলো।

অনলাইন সংবাদ মাধ্যম দ্যা রিপোর্টের প্রতিবেদক অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ও সহকর্মী তূষার হাওলাদার একসঙ্গে  খেতে গিয়েছিলেন রেষ্টেুরেন্টে । সেখানেই আগুনে পুড়ে মারা যান দুজন। অভিশ্রুতি শাস্ত্রী রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

লামিসা ইসলাম বুয়েটের মেকানিক্যাল বিভাগের শিক্ষার্থী ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত অতিরিক্ত ডিআইজি মো. নাসিরুল ইসলামের মেয়ে। আর নাহিয়ান আমিন তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল (ইইই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। বুয়েটের বন্ধু নাহিয়ান আমিনের সঙ্গে ওই ভবনের একটি রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন লামিসা। আগুনে দুইজনই মারা গেছেন।

মা, মেয়ে ও ছেলে একসঙ্গেই ছিলেন। কাজ শেষে মা-মেয়ে ঢোকেন বেইলি রোডে বহুতল ভবনে থাকা ‘কাচ্চি ভাই’ নামের খাবারের দোকানে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা থাকায় ছেলে সেখানে না গিয়ে বাসায় ফেরেন। বহুতল ভবনটিতে আগুন লাগলে মা-মেয়ে পরিবারের কাছে জরুরি বার্তা পাঠান। দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তাঁরা তাঁদের বাঁচানোর জন্য আকুতি জানিয়েছিলেন। এই আগুনের ঘটনায় মা-মেয়ে দুজনই মারা গেছেন। মা লুৎফুন নাহার করিম লাকী ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল প্রভাতি শাখার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ছিলেন। তাঁর মেয়ে জান্নাতিন তাজরী নিকিতা পড়তেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে।

ছেলেরা রেস্টুরেন্টে খাওয়ার বায়না ধরেছিল। বিষয়টি মা নাজিয়া স্বামী আশিককে ফোনে জানিয়েছিলেন। আশিক ছিলেন অফিসে, বনানীতে। স্ত্রীকে বলেন, ছেলেদের নিয়ে পাশেই কোনও একটি রেস্টুরেন্ট যেতে। নাজিয়া দুই ছেলেকে নিয়ে যান ওই ভবনের খানাস নামে একটি রেস্টুরেন্টে। সেখানে গিয়ে বার্গার খেয়েছেন সবাই। কিন্তু খাওয়া শেষে রেস্টুরেন্ট থেকে আর বের হয়ে আসতে পারেননি। ভয়াবহ আগুনে মারা গেছেন তিন জনই।

নারায়ণগঞ্জের রিয়া পড়াশোনা করতেন মালয়েশিয়ায়। শনিবার ২ মার্চ ফিরে যাওয়ার কথা ছিল সেখানে। কিন্তু মালয়েশিয়া ফেরা হলো না তার। ভবনটিতে শপিং করতে এসে আগুনে পুড়ে মারা গেলেন রিয়া ,তার ছোট বোন আলিশা এবং খালাতো বোন নিমু । বাবা শিল্পপতি কুরবান আলী নারায়ণগঞ্জের পোশাক কারখানা রিয়া ফ্যাশনের মালিক। মেয়েকে হারিয়ে একেবারে নিস্তব্ধ।

সাততলা ভবনে আগুনের ঘটনায় জানালার কাচ ভেঙে পাইপ ধরে নিচে নামতে গিয়ে মরতে হলো  রেস্টুরেন্টে কর্মরত জুয়েল গাজী নামের এক বাবুর্চির। একই রেস্টুরেন্টে মামা-ভাগ্নে একসঙ্গে কাজ করলেও ঝুঁকি নিয়ে নিচে নেমে আসতে পেরেছিলেন জুয়েলের ভাগনে রাকিব।

এ ঘটনায় কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান শামীম এবং নুরুল ইসলাম নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাবেক এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ‘নিহতদের মধ্যে বেশকয়েকজন শিশুও রয়েছে। আগুনে ঝলসে যাওয়ায় নিহতদের মরদেহ শনাক্ত করতে গিয়ে বেগ পেতে হয়েছে বেশ। 

মন্তব্য করুনঃ


সর্বশেষ সংবাদ