• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ১২ই শ্রাবণ ১৪৩১ সকাল ১১:৫০:০৬ (27-Jul-2024)
  • - ৩৩° সে:

জঙ্গি সংগঠন শারক্বীয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করতো রহিম


শুক্রবার ১৭ই মে ২০২৪ বিকাল ০৪:২৮



জঙ্গি সংগঠন শারক্বীয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করতো রহিম

ছবি: সংগৃহীত

চ্যানেল এস ডেস্ক: 

‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী আব্দুর রহিমকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। 

বুধবার (১৫ মে) গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে তার দেওয়া তথ্য মতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরক জব্দ করেছে সিটিটিসি।  

গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে ১টি ৭.৬৫ বিদেশি পিস্তল, দেশীয় তৈরি বন্দুক ৪টি, দেশীয় তৈরি বারুদ লোডেড গান ৩টি, দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটার গান ১টি, দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্র ১টি, গুলি ১৬টি, কার্তুজ ১১টি, শটগানের খোসা ২৪টি, বাইনোকুলার ২টি, গ্যাস মাস্ক ১টি, চার্জার লাইট ১টি, রিচার্জেবল ব্যাটারি ১টি, ওয়াকিটকি ও চার্জার ২টি, এসিড সৃদশ্য তরল পদার্থ ৬ লিটার, ইলেকট্রিক তার ৬০ ফুট, মোবাইল সিগন্যাল বুস্টার ১টি, তারসহ এন্টেনা ১টি, হাতুরি ১টি, করাত ১টি, হেক্স ব্লেড ১টি, বাল্ব ৪টি, ইলেকট্রিক হোল্ডার ৪টি, নীল রংয়ের প্লাস্টিকের ড্রাম ২টি ও ত্রিপাল ১টি জব্দ করা হয়।

সিটিটিসি জানায়, গ্রেপ্তার আব্দুর রহিম ২০১৯ সালের দিকে 'রহিম ডাকাত' গ্রুপের নেতৃত্ব দিয়ে রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। সম্প্রতি সে জঙ্গি সংগঠন ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ কে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করে আসছিল। 

শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপি কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান।

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী আব্দুর রহিম। গ্রেপ্তারের পর সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, শারক্বীয়াকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের জন্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন বনে ড্রামের ভেতরে মাটির নিচে লুকিয়ে রেখেছিল। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানাধীন ছাগল খাইয়্যা এলাকার পাহাড়ের ঢালে ঘন জঙ্গলের মধ্যে মাটির নিচে রক্ষিত অবস্থায় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গুলিসহ বিস্ফোরক সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে। 

তিনি বলেন, আব্দুর রহিম অন্য একটি সংগঠনকে অস্ত্র সরবরাহের জন্য অস্ত্র মজুদ করছিল। আগে একাধিকবার অন্য জঙ্গি সংগঠনকে অস্ত্র-গোলাবারুদ সরবরাহ করেছিল। পার্বত্য অঞ্চলে শারক্বীয়া’র ট্রেনিং ক্যাম্পে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হলে গ্রেপ্তার আব্দুর রহিম অস্ত্র মাটির নিচে লুকিয়ে রাখে।

সম্প্রতি আমরা গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করি। জিজ্ঞাসাবাদে এসব অন্ত্রের সন্ধান পাওয়া যায়। তাকে নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন বনে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে শারক্বীয়া’র  সদস্যদের ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। এতে বিভিন্ন ধরনে কেমিক্যাল লাগতো। সেই কেমিক্যালও সরবরাহের কথা ছিলো। তিনি জঙ্গি সংগঠনে সরবরাহের জন্য মোবাইল নেটওয়ার্ক বুস্টার সংগ্রহ করেছিলো। 

সিটিটিসি প্রধান বলেন, শারক্বীয়া'র মাস্টার মাইন্ড ও সংগঠনের প্রধান শামিন মাহফুজ যখন পাহারে সংগঠনের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প শুরু করে তখন থেকে আব্দুর রহিম অস্ত্র সংগ্রহের কাজ করছিলো। তার সঙ্গে পূর্বে গ্রেপ্তার হওয়া অস্ত্র সরবরাহকারী মো. কবির আহাম্মদ যোগাযোগ ছিল। কবির সংগঠনের জন্য কাজ করতে রহিমকে প্রস্তাব দেয়। এতে রহিম তার প্রস্তাবে রাজি হয় এবং অস্ত্র সরবরাহের পাশাপাশি সংগঠনের সদস্য সংগ্রহেও সে কাজ করে।

গ্রেপ্তার আব্দুর রহিমকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার (১৭ মে) ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে বলেও যোগ করে সিটিটিসি'র প্রধান। 

তিনি বলেন, গত ২৩ জুন (২০২৩ সাল) শারক্বীয়া'র মাস্টারমাইন্ড ও সংগঠনের প্রধান শামিন মাহফুজকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে গ্রেপ্তারের পর শারক্বীয়া’র প্রশিক্ষণ, অস্ত্রগুলোর উৎস, অর্থায়ন সম্পর্কে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শামিন মাহফুজকে গ্রেপ্তার আগে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মো. ইয়াছিন (৪০) এবং বান্দরবান থেকে অস্ত্র সরবরাহকারী মো. কবির আহাম্মদকে (৫০) ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয়। 

মন্তব্য করুনঃ


-->