• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১ ভোর ০৫:২২:৩৮ (27-Apr-2024)
  • - ৩৩° সে:

‘ছোট্ট পুঞ্জিতে নারী জাগরণের উদাহরণ সৃষ্টি করেছে বান ইয়া ট্রেইলাং’


বুধবার ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২২ রাত ০৩:৪৭



‘ছোট্ট পুঞ্জিতে নারী জাগরণের উদাহরণ সৃষ্টি করেছে বান ইয়া ট্রেইলাং’

হাজেরা বেগম

শেষপর্যন্ত স্বামীর বাড়ি ছেড়ে একেবারেই চলে আসতে হলো। আবার বাবার বাড়িতে এসে উঠলেন হাজেরা বেগম। কী করবেন, কী খাবেন, চার বছরের মেয়েকেই বা কীভাবে মানুষ করবেন—ভাবনার তাঁর শেষ নেই।

তাঁদের বাড়ির পাশেই খাসিয়া-গারো সম্প্রদায়ের মানুষদের পুঞ্জি (গ্রাম)। সে গ্রামে পানের জুমে দিনমজুরির কাজ নিলেন হাজেরা। যা আয় হয়, তা দিয়ে কষ্টেসৃষ্টে চলে যায় সংসার। তবু স্বামীর বাড়ির বিভীষিকাময় দিনগুলোর কাছে সেসব কষ্ট কিছুই না।

কাজ করতে গিয়েই পুঞ্জির নারী সংগঠনের কথা জানতে পারেন হাজেরা। সংগঠনের উদ্যোগে নারীদের স্বাবলম্বী করতে একবার সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল। হাজেরাও নাম লেখান। প্রশিক্ষণ শেষে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের একটি সেলাই যন্ত্র পান। এটি দিয়ে বাড়িতে দরজির কাজ শুরু করেন। সেটা ২০১৭-১৮ সালের কথা। এখন তাঁর মাসে আয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। পেয়েছেন মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের ‘জয়িতা’ সম্মাননা স্মারক। তাঁর প্রতিষ্ঠানে কাজ শিখছেন আরও তিনজন নারী।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পশ্চিম গ্রিজিং এলাকায় হাজেরার বাড়ি। যে নারী সংগঠনের সহায়তা পেয়েছেন হাজেরা, তার নাম বান ইয়া ট্রেইলাং বা মিলেমিশে কাজ করি।

মিলেমিশে কাজ করি

গ্রিজিংয়ের পাশেই সিংগুর পুঞ্জি। এখানে ৬২টি খাসিয়া ও গারো পরিবারের বাস। এমনই এক গারো পরিবারের মানুষ ববিতা ডিও। স্নাতক উত্তীর্ণ ববিতা চেয়েছিলেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীসহ এলাকার দুস্থ নারীরা স্বাবলম্বী হোক। তাঁর সঙ্গে জোট বাঁধলেন পুঞ্জির আরও কয়েকজন নারী।

২০০৮ সালে ববিতা ডিওর চাওয়া বাস্তবে রূপ পেল। গঠিত হলো ‘বান ইয়া ট্রেইলাং’। চাঁদা তুলে তহবিল গঠন করা হলো। পরিমাণ—৫০ হাজার টাকা। চার বছর পর মৌলভীবাজার জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধনও মিলল। শুরু হলো কাজ।

নারীদের সেলাই, সবজি চাষসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হলো। বছরে এখন ৪০ জন নারীকে সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। স্বল্প সুদে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া শুরু হলো। বিনা সুদেও অনেকে ঋণ পান। বাল্যবিবাহ এবং নারী-শিশু নির্যাতন বন্ধে এলাকায় উঠান বৈঠক করেন। ২০১২ সাল থেকে সিংগুর পুঞ্জি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিলও দিয়ে আসছেন তাঁরা। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৪০ জন।

মন্তব্য করুনঃ


সর্বশেষ সংবাদ