• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ রাত ০৮:১৩:১৮ (29-Mar-2024)
  • - ৩৩° সে:

নারীদের পত্রিকা পাঠের আসর


বুধবার ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২২ রাত ০৩:৫১



নারীদের পত্রিকা পাঠের আসর

তৃণমূলের নারীদের নিয়ে চলছে সংবাদপত্র পাঠের আসর। সম্প্রতি সুনামগঞ্জ শহরের জেলা মহিলা পরিষদ কার্যালয়ে

নারীশিক্ষা আন্দোলনের নেত্রী, নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই তখন হামলার শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে সর্বত্র ব্যাপক আলোচনা। টেলিভিশনে এই খবর দেখে কিশোরী শেফালি বাউরি উদ্বিগ্ন। লেখাপড়া না জানা শেফালি বাসায় পত্রিকা এলেই মালালার ছবি খোঁজে। পত্রিকা নিয়ে দৌড়ে যায় বাসার মালিক গৌরী ভট্টাচার্যের কাছে। তিনি মালালার খবরগুলো পড়ে শোনান শেফালিকে। দরিদ্র চা-শ্রমিক পরিবারের মেয়ে শেফালি বাউরি। তার মধ্যে খবর জানার এমন আগ্রহ দেখে নতুন চিন্তা খেলে যায় গৌরী ভট্টাচার্যের মাথায়। ঠিক করেন সপ্তাহে অন্তত এক দিন নারীদের দিয়ে সংবাদপত্র পাঠের আসর করবেন। সেই থেকে শুরু। ১০ বছর ধরে চলছে ‘তৃণমূল নারীদের নিয়ে সংবাদপত্র পাঠের আসর’।

এই আসরে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পড়াশোনা না জানা নারীরাও আসেন। প্রতি বুধবার বিকেলে এই আয়োজন হতো জেলা মহিলা পরিষদ কার্যালয়ে। প্রতিটি আসরে ৪০ থেকে ৫০ জনের জমায়েত হতো। ঘণ্টা দু–এক চলে সংবাদপত্র পাঠ, খবর নিয়ে আলোচনা, বিশ্লেষণ। এখান থেকে নারীরা স্বাস্থ্য, শিক্ষা বিষয়ে সচেতনতার পাশাপাশি দেশ-বিদেশের নানা ঘটনা সম্পর্কে জানছেন। নারীর উন্নয়ন ও অধিকার বিষয়ে সচেতনতার সঙ্গে বাল্যবিবাহ, যৌতুক, নারীদের উত্ত্যক্তকরণ ও নির্যাতন বন্ধে ভূমিকা রাখায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন তাঁরা।

জেলা মহিলা পরিষদের বর্তমান সভাপতি গৌরী ভট্টাচার্য তখন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা বসেন বিকেলে। দুপুরে হকার একটি পত্রিকা তাঁর বাসায় দিয়ে যান। তাঁর বাসায় তখন শেফালি বাউরি নামের কিশোরীকে আশ্রয় দিয়েছেন। তার বাড়ি হবিগঞ্জের চানপুর চা–বাগানে। একসময় চা-শ্রমিক ছিল সে, লেখাপড়া জানে না। এই শেফালি বাউরির সংবাদ জানার আগ্রহ থেকেই গৌরী ভট্টাচার্যের মনে হলো, অনেক নারীই তো সংগঠনের কার্যালয়ে আসেন। অনেকেই পড়াশোনা জানেন না। সবাইকে নিয়ে সপ্তাহে এক দিন সংবাদপত্র পাঠের আসর করলে কেমন হয়! বিষয়টি শুনে সংগঠনের তৎকালীন সভাপতি শীলা রায় উৎসাহ দেন। এরপর ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনের কার্যালয়ে উদ্বোধন করা হয় ‘তৃণমূল নারীদের নিয়ে সংবাদপত্র পাঠের আসর’।

গৌরী ভট্টাচার্য বলেন, একসময় অনেককে ডেকে আনতে হতো। এখন বুধবারে জায়গা দেওয়া যায় না। যাঁরা একসময় অন্যদের সামনে কথা বলতে ভয় পেতেন, তাঁরা এখন সবার সামনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

তৃণা দে এ বছর সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু পড়ি না, প্রতিটি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি। কারও প্রশ্ন থাকলে সেটির উত্তর দেন বড়রা।’

মন্তব্য করুনঃ


সর্বশেষ সংবাদ