সাজেদুর রহমান, নাটোর প্রতিনিধি: রাজধানী ঢাকার ইলেকট্রিনিক্স পণ্যের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানকে (৪০) কৌশলে ডেকে নিয়ে প্রাণণাশের ভয় দেখিয়ে দুই লাখ ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে নাটোরে এক নারীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারাকৃতরা হলেন নাটোর সদর উপজেলার ফুলস্বর গ্রামের আফেজ উদ্দিনের ছেলে আবুল হোসেন (৩২), নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে ফারুক হোসেন (২৮) , অর্জুনপুর গ্রামের হামিদ আলী আকন্দের ছেলে হোসেন আলী আকন্দ (৪০), রাজশাহীর চারঘাট থানার হলিদাগাছী গ্রামের মামুরুর রহমান বাবুর স্ত্রী শরিফা আক্তার সাথী (২৮) এবং শিবপুর গ্রামের জসীম উদ্দিনের ছেলে সিএনজি চালক নজু মিয়া (৩৫)। এসময় প্রতারকদের নিকট থেকে নগদ এক লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (২২ জুলাই) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা। তিনি বলেন, গত ১৪ই জুলাই রাতে ঢাকা থেকে ইলেকট্রিনিক্স পণ্যের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বাসযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাচ্ছিলেন। বাসটি সিরাজগঞ্জে পোঁছালে পাশের সিটে বসা শরিফা আক্তার সাথীর সাথে প্রথমে পরিচয় এবং পরে সেলফোন নম্বর বিনিময় হয় তাদের। পরদিন ঢাকায় ফেরার পথে শরিফা আক্তার সাথী ব্যবসায়ী মিজানুরকে ফোন করে নাটোরে তার বাড়ি হয়ে ঢাকায় যেতে প্রস্তাব দেন।
মিজানুর রাজী হলে তাকে সিএনজিযোগে নাটোর শহর থেকে ফুলস্বর গ্রামের কানু সরকারের ছেলে জমির উদ্দিন সরকারের বাড়িতে নিয়ে যায় সাথী। বাড়িতে পোঁছানোর পর পূর্ব পরিকল্পনা মতো সাথীর সহযোগিরা ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানকে বিবস্ত্র করে সাথীর সাথে অশ্লীল ছবি তোলে এবং খারাপ কাজের অপবাদ দিয়ে মারপিট করে। পরে ছবি ফাঁস এবং প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে বিকাশ নম্বরে দুইলাখ দশ হাজার টাকা আদায় করে। টাকা আদায়ের পর সিএনজিযোগে মিজানুর রহমানকে বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মেদপুরে রেখে পালিয়ে যায় তারা।
পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনায় মিজানুর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে বুধবার সকালে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সিএনজিসহ আবুল হোসেন, শরিফা আক্তার সাথী, ফারুক, হোসেন আলী ও নজুকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপরাধ স্বীকার করেছে। তিনি আরও বলেন, এই ফিটিং পার্টি তাদের নারী সদস্যদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষদের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আমরা এই চক্রের সদস্যদের রিমান্ডে এনে আরও কয়টি এমন ঘটনা ঘটিয়েছে এবং আরও কারা তাদের সাথে জড়িত রয়েছে তা বের করার চেষ্টা করবো। প্রেস ব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক জুবায়ের, গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আনারুল ইসলামসহ অন্যান্যরা।