নূরুল আমিন দুলাল ভূঁইয়া, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা আ’লীগের ২০০৩ইং সালে অর্থাৎ ১৭ বছর পূর্বে সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছিল কমিটি। গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক ১৪ বছর পূর্বে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে ওই কমিটি।
এরপর থেকে গঠনতন্ত্রের বিধান উপেক্ষা করে চলছে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির কার্যক্রম। ইতিমধ্যে ৬৭ জনের কমিটির। সভাপতি, সহ-সভাপতি ৩ জন, সম্পাদক মন্ডলীর ৩ জন সহ ২৪ জনই মৃত্যু বরন করেছে। নির্বাচিত সভাপতি তোজাম্মেল হোসেন চৌধুরী দুলালের মৃত্যুর পূর্বেই তাকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করে অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ হয়েছেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি।
তার ক্ষমতার উৎস জেলা সাধারণ সম্পাদকের বোন জামাই। বছর খানেক নিজে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পরিচয় দিলেও পরবর্তীতে গঠনতন্ত্র বহির্ভূত অলৌকিক ক্ষমতার বলে নিজে সেজে যান সভাপতি।সবশেষ গত বছর রায়পুর উপজেলা কমিটির সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেন জেলা কমিটি। এ লক্ষ্যে ১০টি ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
যদিও ওই কমিটিগুলি নিয়ে তৃণমূল পর্যায় রয়েছে ক্ষোভ ও বিতর্ক। তবুও তৃণমূল ও ত্যাগী নেতা-কর্মীদের ভাষ্য ছিল, অন্তত যেনতেন ভাবে সম্মেলনটুকু হয়েও ১৭ বছরের জড়তা দূর হোক। কিন্তু কয়েকবার তারিখ দেওয়ার পরও অদৃশ্য কারনে তাও সম্পন্ন হয়নি। এদিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাবেক নের্তৃবৃন্দ যাদের বয়স চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ উর্ধ্ব তারা সম্মেলন না হওয়ায় পাচ্ছেনা পদ-পদবী।
ক্রমান্বয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে অনেকেই। হতাশা অধিকাংশ নেতা-কর্মীদের মাঝে।এদিকে গত মাস দেড়েক পূর্বে ৬নং কেরোয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান কামাল করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন করেছেন। তার মৃত্যুতে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। প্রয়াত চেয়ারম্যানের স্ত্রী শাহিনুর বেগম রেখাকে আ’লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে আ’লীগের আরো দুই বিদ্রোহী প্রার্থীও মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল বুধবার ওই দুই প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহারের উদ্দেশ্যে ডাকা হয় বিশেষ বর্ধিত সভা। পরে কমিটির কোন মিটিং না করেই সন্ধ্যায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি (নিজেকে সভাপতি উল্লেখ করে) ও সাধারণ সম্পাদক দুজনের স্বাক্ষরিত তারিখ বিহীন একটি পত্রে বিদ্রোহী প্রার্থী সৈয়দ আজিজুর রহমান (ভিপি কাকন) কে মৃত সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান কামালের স্থলাভিষিক্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ঘোষণা করে একটি পত্র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অগঠনতান্ত্রিকভাবে নব নির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদকের নিকট হস্তান্তর করেন। বিষয়টি আওয়ামী শিবিরে ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও হাস্যরসের সৃষ্টি করেছে।
রায়পুর উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন,লক্ষ্মীপুর আ’লীগ ও রায়পুর উপজেলা আ’লীগএক পরিবারের ও তাদের স্বজনদের কাছে লিজ দেওয়া হয়েছে বলে মনেহয়। জেলা চলছে ৩/৪ জন নেতার নিজেদের বানানো গঠনতন্ত্রে আর রায়পুর উপজেলা চলছে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দ্বৈত ইচ্ছায়।
উপজেলায় ১৭ বৎসরে ২৪ জন নেতার মৃত্যুর পরও সম্মেলনের কোনো খবর নেই। সেই কমিটিতে হঠাৎ ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে এনে উপজেলা কমিটির কোন মিটিং না করেই সাংগঠনিক সম্পাদক বানানো এটা কোন গঠনতন্ত্রের বিধান? আ’লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি বা কোন গঠনতন্ত্র আছে কিনা সন্দেহ হচ্ছে।