মোঃ রাশেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ করোনার আশংকাজনক ভাবে কমেছে রাজস্ব আদায়েও। বিশেষত সেবা ও পণ্যে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আদায় ও কমেছে। এতে সরকারের সামগ্রিক রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিরূপ প্রভাব তৈরি করছে। বিশেষ করে করোনার প্রভাবে গত এপ্রিল থেকে জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চট্টগ্রামে ভ্যাট আদায় কমেছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী সাধারণ ছুটিতে পর্যটন নির্ভর সেবাখাত হিসেবে হোটেল, রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় এবং শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় ভ্যাট আদায় কমেছে। তথ্য অনুযায়ী, বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চট্টগ্রামে ভ্যাট আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। এতে আদায় হয় ১০ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১১ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। গত মে পর্যন্ত ভ্যাট আদায় হয়েছে ৭ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা। অথচ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মে মাস পর্যন্ত আদায় হয়েছিল ৮ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের এপ্রিল মাসে ৭৯৯ কোটি এবং মে মাসে ৮৬৯ কোটি টাকা ভ্যাট আদায় হয়েছিল। কিন্তু চলতি অর্থবছরের এপ্রিল মাসে ৩৭৩ কোটি টাকা এবং মে মাসে ৪২০ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। বিগত চলতি অর্থবছরের বিগত দুই মাসের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা কম এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এপ্রিল-মে মাসের আদায়ের চেয়ে ৮৭৫ কোটি টাকা কম।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, চলতি জুন মাসে সবমিলিয়ে ৭শ’ কোটি টাকার মতো ভ্যাট আদায় হতে পারে। যা জুন মাসের লক্ষ্যমাত্রা থেকে সাড়ে ৫শ কোটি টাকা কম। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে ভ্যাট লক্ষ্যমাত্রা কমতে পারে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ এন্ড ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, করোনার কারণে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শিল্প কারখানা, বড় বড় সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ছিল। বিশেষত চট্টগ্রাম পর্যটন নির্ভর একটি এলাকা। করোনায় পর্যটন নির্ভর সেবাখাতের প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় ভ্যাট পাওয়া যায়নি।
শিল্পখাতে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। নির্মাণ খাতে স্থবিরতা চলছে। শ্রমিকদের কাজ নেই। রড, সিমেন্ট, পেইন্টসহ নির্মাণ উপকরণের বেচাকেনা কমে গেছে। ফলে আমরা ভ্যাট পাচ্ছি না। তিনি বলেন, ভ্যাট একটি পরোক্ষ কর। সেবাখাত চালু থাকলে, শিল্প কারখানা চললে, উৎপাদিত পণ্য বিক্রি হলেই ভ্যাট আসে। আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে গত তিনমাস ধরে এসব কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। এতে করে আমরা ভ্যাট পাচ্ছি না। অর্থবছরের শেষ মাস জুন। ফলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমাদের বেগ পেতে হবে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ভ্যাট আদায়ের গতিও বাড়বে।