ক্ষতিপূরণের সব টাকাই পাওয়ার কথা জমির মালিক বা বর্গাচাষীর। বাস্তবে তারা পেয়েছেন দুই-তৃতীয়াংশ বা অর্ধেক। আবার মিথ্যা মামলার জালে আটকে অনেকে টাকার চেহারাই দেখেননি। বলছি, কক্সবাজারে চলমান পৌনে একশ উন্নয়ন প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের হরিলুটের কথা। এখন পর্যন্ত লুট হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। আর সহযোগিতার নামে এ কাজটি করেছেন তথাকথিত মধ্যস্থতাকারী বা দালালচক্র। এতে অভিযোগ উঠেছে পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধেও।
অনুসন্ধানে মিলেছে, মৌজামূল্যের প্রায় ৩ গুণ হিসাবে পৌনে একশ প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ দাঁড়ায় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। যা নিয়ে চলছে রীতিমত হরিলুট। ইতোমধ্যে পরিশোধ হওয়া প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে দালালচক্র। গড়ে ২৫ শতাংশ হিসেবে যা প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।
যেসব প্রকল্প ঘিরে হরিলুটের মহোৎসব, তার অন্যতম মহেশখালি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বন্দর, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং রেললাইন সম্প্রসারণ। তবে প্রায় সবক্ষেত্রে জমির মালিকরা ঠকলেও তেলের পাইপলাইন স্থাপন বা এসপিএম প্রকল্পে বর্গাচাষীদের ঠকিয়ে সব টাকাই ভাগিয়ে নিয়েছে ভূমিমালিকরা।
লুটপাটের রাজ্যে অবিশ্বাস্য এক ঘটনার জন্ম দিয়েছে কক্সবাজার পৌরসভা। পানি শোধনাগার প্ল্যান্ট স্থাপনে নেয়া হয় চরম জালিয়াতির আশ্রয়। মামলা চলার পরও খাস জায়গা রেজিস্ট্রির মাধ্যমে নতুন খতিয়ান তৈরি করে পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, তার স্ত্রী আর শ্যালককে জমির মালিক সাজিয়ে অধিগ্রহণ বাবদ পরিশোধের উদ্যোগ নেন ৩৮ কোটি টাকা। অথচ টাকার চেহারাই দেখেননি জমির মূল মালিকরা।
ভূমি অধিগ্রহণের আড়ালে হরিলুটের বিষয়টি জানেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনও। জানান, জালিয়াতি বন্ধে চেষ্টার কথা।
অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ আদায়ে ভূমির শ্রেণিবিন্যাস নিয়েও জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে এসব প্রকল্প ঘিরে।